🙏🙏 Welcome to BIOSGD 🙏🔬🧪🫁🫀🧬🩸🧠🇮🇳 (1) CLASS XII          (2) CLASS XI IMPORTANT QUESTIONS        (3) HS EXAM QUESTIONS     (4) NCERT Biology book 📚

সার্বক্ষণিক ছন্দ (Circadian Rhythms) : শরীরের অদৃশ্য ঘড়ি




আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে একটি জটিল ঘড়ি রয়েছে যা আমাদের দিন-রাতের চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। এই ঘড়িকে সার্বক্ষণিক ছন্দ বলা হয়, এবং এটি আমাদের ঘুম-জাগার চক্র, হজম, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলির সময়সূচী নির্ধারণ করে।


সার্বক্ষণিক ছন্দ কীভাবে কাজ করে?

সার্বক্ষণিক ছন্দ মূলতঃ দুটি প্রধান উপাদান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়:-

    • আলো: আমাদের চোখে বিশেষ কোষ রয়েছে যা আলোর পরিবর্তন অনুভব করে। এই কোষগুলি মস্তিষ্কের একটি অংশকে সংকেত পাঠায় যা সার্বক্ষণিক ছন্দ নিয়ন্ত্রণ করে।

   • পিনিয়াল গ্রন্থি: এই ছোট্ট গ্রন্থি মস্তিষ্কের গভীরের মধ্যে অবস্থিত এবং মেলাটোনিন নামক একটি হরমোন উৎপাদন করে। মেলাটোনিন আমাদের ঘুম-জাগার চক্র নিয়ন্ত্রণ করে।


মেলাটোনিন:

মেলাটোনিন আমাদের ঘুমের গুণমানকে প্রভাবিত করে। অন্ধকারের সময়, পিনিয়াল গ্রন্থি মেলাটোনিনের মাত্রা বাড়ায়। মেলাটোনিন আমাদের ঘুমের ঘুমের তন্দ্রা এনে দেয় এবং আমাদের ঘুমের গভীরতা বাড়ায়। সকালের আলোর সংস্পর্শে মেলাটোনিনের মাত্রা কমে যায়, আমাদের জেগে ও সতর্ক হতে উৎসাহিত করে।


∆ কিভাবে সার্বক্ষণিক ছন্দ কাজ করে ?

হাইপোথ্যালামাসের মধ্যে অবস্থিত একটি ছোট্ট মস্তিষ্কের অঞ্চল SCN( Suprachiasmatic Nucleus) কে মাস্টার ঘড়ি বলা হয়। এটি চোখ থেকে আলোর সংকেত গ্রহণ করে এবং শরীরের বাকি অংশকে সময় সম্পর্কে জানায়। আমাদের চোখের রেটিনা আলোর পরিবর্তন শনাক্ত করে এবং সেই তথ্য মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস এর SCN অংশে পাঠায়। এটি চোখ থেকে আলোর মাত্রা সম্পর্কে তথ্য গ্রহণ করে এবং পিনিয়াল গ্রন্থি সহ মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে সংকেত পাঠায়। 

    আলোর অনুপস্থিতিতে, বিশেষ করে সন্ধ্যা এবং রাতে, SCN মেলাটোনিনের উৎপাদন ও ক্ষরণকে উদ্দীপিত করার জন্য পিনিয়াল গ্রন্থিতে সংকেত পাঠায়। মেলাটোনিন সেরোটোনিন থেকে সংশ্লেষিত হয়, যেটি একটি নিউরোট্রান্সমিটার। আলোর সংস্পর্শে এটির উৎপাদন এবং প্রকাশ বাধাগ্রস্ত হয় এবং এর মাত্রা সাধারণত ঘুমানোর কয়েক ঘন্টা আগে বাড়তে শুরু করে। 


    মেলাটোনিন বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াকে প্রাকৃতিক দিবা-রাত্রি চক্রের সাথে সমন্বয় করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে ঘুম-জাগানোর চক্র, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, হরমোন নিঃসরণ এবং এমন অন্যান্য কাজ যেগুলি সার্বক্ষণিক ছন্দকে অনুসরণ করে । মেলাটোনিনের মাত্রা রাতের বেলায় বাড়ে। অন্ধকারের সময় মেলাটোনিন উৎপাদনের বৃদ্ধি শরীরকে সংকেত দেয় যে এটি বিশ্রামের সময়, ফলে আরামদায়ক ঘুমের প্রসার ঘটে । ভোরের দিকে, ধীরে ধীরে আলোর সংস্পর্শে এলে মেলাটোনিনের মাত্রা হ্রাস পায় , জাগ্রততা প্রকাশ পায়।


সার্বক্ষণিক ছন্দের গুরুত্ব :- 

    সুস্থ সার্বক্ষণিক ছন্দ আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের শক্তি মাত্রা, মেজাজ, একাগ্রতা এবং ঘুমের মানকে প্রভাবিত করতে পারে। সার্বক্ষণিক ছন্দ ব্যাহত হলে, এটি নিম্নলিখিত সমস্যাগুলি ঘটতে পারে:

    অনিদ্রা: আপনি ঘুমিয়ে পড়তে বা ঘুমে থাকতে সমস্যা অনুভব করতে পারেন।

    ক্ষুধার পরিবর্তন: আপনি অতিরিক্ত খাওয়ার বা কম খাওয়ার অনুভব করতে পারেন।

    মেজাজের পরিবর্তন: আপনি চাপ, चिंता বা বিষণ্ণতা অনুভব করতে পারেন।

    ক্লান্তি: আপনি সারা দিন ক্লান্ত অনুভব করতে পারেন।

    রোগের ঝুঁকি: সার্বক্ষণিক ছন্দ ব্যাহত হলে কিছু রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে, যেমন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সার।


আপনার সার্বক্ষণিক ছন্দ উন্নত করার জন্য টিপস :-

  • প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং জেগে ওঠার চেষ্টা করুন।
  • দিনের বেশিরভাগ সময় প্রাকৃতিক আলোতে থাকুন।
  • রাতে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহার সীমিত করুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • সুস্থ খাদ্য খান।

আমাদের সার্বক্ষণিক ছন্দ বুঝতে এবং সেই অনুযায় বাস করার ফলে আমরা আরও ভালো ঘুমাতে পারি, আরও শক্তি অনুভব করতে পারি এবং সামগ্রিকভাবে সুস্থ থাকতে পারি।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন